১১:২৫ পূর্বাহ্ন

বুধবার, ২০ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : জুন ১০, ২০২২ ৪:৩৬ অপরাহ্ন
গরু মোটাতাজা করতে খামারিদের করণীয়
কৃষি বিভাগ

গরু পালন লাভজনক হওয়াতে এখন আমাদের দেশের অনেকেই গরুর খামার করার প্রতি ঝুঁকছেন। তবে, এই গরু যদি হয় আরেকটু মোটাতাজা তাহলে আর কথা ই নাই। আর এর জন্য দরকার গরুর সুষম খাদ্য। আর সুষম খাদ্য প্রয়োগে আপনি আরো লাভবান হতে পারেন গরু পালনে।

খামারে গরু মোটাতাজাকরণে যেসকল আমিষ খাবার আপনার গরুকে খাওয়াবেন:

শুকনা খড়: ২ বছর বয়সের গরুর জন্য দৈহিক ওজনের শতকরা ৩ ভাগ এবং এর অধিক বয়সের গরুর জন্য শতকরা ২ ভাগ শুকনা খড় ২ থেকে ৩ ইঞ্চি করে কেটে এক রাত লালীগুড়-চিটাগুড় মিশ্রিত পানিতে ভিজিয়ে সরবরাহ করতে হবে।

কাঁচা ঘাস: গরুকে প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ কেজি কাঁচা ঘাস বা শস্য জাতীয় তাজা উদ্ভিদের উপজাত দ্রব্য যেমন- নেপিয়ার, পারা, জার্মান, দেশজ মাটি কলাই, খেসারি, দুর্বা ইত্যাদি খাওয়াতে হবে।

দানাদার খাদ্য: গরুকে প্রত্যেক দিন কমপক্ষে ১ থেকে ২ কেজি দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। নিচে ১০০ কেজি দানাদার খাদ্যের তালিকা দেয়া হলো- গম ভাঙা-গমের ভুসি ৪০ কেজি চালের কুঁড়া ২৩.৫ কেজি খেসারি বা যে কোনো ডালের ভুসি ১৫ কেজি তিলের খৈল-সরিষার খৈল ২০ কেজি লবণ ১.৫ কেজি। উল্লিখিত তালিকা ছাড়াও বাজারে প্রাপ্ত ভিটামিন মিনারেল মিশ্রণ ১% হারে খাওয়াতে হবে।

১৫০ কেজি ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা: খড় = ৩ কেজি কাঁচা ঘাস = ৫-৬ কেজি দানাদার খাদ্যের মিশ্রন = ১.৫-২ কেজি চিটাগুড় = ৫০০ গ্রাম ইউরিয়া = ৪৫ গ্রাম (নিয়মানুয়ায়ী) লবন = ৩৫ গ্রাম।

১০০ কেজি দৈহিক ওজনের গবাদিপশুর খাদ্য তালিকা: ধানের খড় = ২ কেজি সবুজ ঘাস = ২ কেজি (ঘাস না থাকলে খড় ব্যবহার করতে হবে দানদার খাদ্যে মিশ্রন = ১.২-২.৫ কেজি ইউরিয়া = ৩৫ গ্রাম (নিয়মানুযায়ী) চিটাগুড়া = ২০০-৪০০ গ্রাম লবণ = ২৫ গ্রাম দানাদার খাদ্যের সাথে লবন, ইউরিয়া, চিটাগুড় এক সাথে মিশিয়ে দিনে ২ বার দিতে হবে। ধানের খড় এবং কাঁচা ঘাস ছোট ছোট করে কেটে এক সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ালে ভালো ফল পাওয়া যায়।

কৃমিমুক্তকরণ ও টিকা প্রদান: গরুকে ডাক্তারের নির্দেশনা মত কৃমির ওষুধ খাওয়াতে হবে। নতুন গরু সংগ্রহের পর পরই পালের সব গরুকে একসঙ্গে কৃমিমুক্ত করা উচিত। এক্ষেত্রে প্রতি ৭৫ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য ১ টি করে এনডেক্স বা এন্টিওয়ার্ম ট্যাবলেট ব্যবহার করা যেতে পারে।

পূর্ব থেকে টিকা না দেয়া থাকলে খামারে আনার পর পরই সব গরুকে তড়কা, বাদলা ও ক্ষুরা রোগের টিকা দিতে হবে। এ ব্যাপারে নিকটস্থ পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে।

ঘর তৈরি ও আবাসন ব্যবস্থাপনা: আমদের দেশের অধিকাংশ খামারী ২/৩ টি পশু মোটাতাজা করে থাকে, যার জন্য সাধারণত আধুনিক শেড করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে যে ধরনের ঘরেই গরু রাখা হোক, ঘরের মধ্যে পর্যন্ত আলো ও বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘরের মল- মূত্র ও অন্যান্য আবর্জনা যাতে সহজেই পরিষ্কার করা যায়, সে দিকে খেয়াল রেখে ঘরে তৈরি করতে হবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ৯, ২০২২ ১১:৪৮ অপরাহ্ন
ঝালকাঠিতে কৃষি আবহাওয়া বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত
কৃষি গবেষনা

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): ঝালকাঠিতে কৃষি আবহাওয়া তথ্য পদ্ধতি উন্নতকরণ প্রকল্পের রোভিং সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার(৯ জুন) শহরের চড়ইভাতি কমিউনিটি সেন্টারে ডিএই’র উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী।

এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) উপপরিচালক মো. মনিরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধক হিসেবে ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মো. মামুন-উর-রশিদ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মো. ছায়েব আলী, বরিশাল সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মঈন তালুকদার এবং কাঠালিয়ার উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান সিকদার।

অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. অলিউল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বশির আহমেদ হাওলাদার, মৎস্য খামার ব্যবস্থাপনার আব্দুল কুদ্দুস মিয়া, পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারি প্রকৌশলী মো. ওহেদুল ইসলাম, নলছিটির কৃষক রাসেল খান প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী বলেন, কৃষির ওপর আমরা নির্ভরশীল। এর সুরক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই প্রতিকূলতার হাত থেকে ফসলকে বাঁচাতে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। এজন্য আবহাওয়াবার্তা অনুসরণ করা জরুরি। এর মাধ্যমে দুর্যোগকে থামাতে পারব না ঠিকই, তবে শস্যের ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

অনুষ্ঠানে ডিএই, কৃষি তথ্য সার্ভিস, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, মৎস্য অধিদপ্তর, আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং কৃষকসহ ২’শ ৭০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

 

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ৯, ২০২২ ৮:২৭ পূর্বাহ্ন
কৃষি উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় বিশ্ব
কৃষি বিভাগ

গত ১৮ মে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে বিশ্ব দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে পারে। ইউরোপের ‘শস্য ভান্ডার’ বলা হয় ইউক্রেনকে। বিশ্বের খাদ্যশস্যের বড় রপ্তানিকারক রাশিয়া এবং ইউক্রেন। চলমান যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক খাদ্যসংকট তীব্রতর হচ্ছে।

বিশ্ববাজারে গমসহ অনেক খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে গেছে। ইতোমধ্যে ভারত গম রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে বড় সার রপ্তানিকারক দেশ রাশিয়া। যুদ্ধাবস্থা দীর্ঘায়িত হলে বৈশিক বাজারে সারের সংকট দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশকে খাদ্যশস্যের বড় একটা অংশ আমদানি করতে হয়; অন্যদিকে কৃষিতে যে সার দরকার হয়, তার একটি বড় অংশও আমদানির ওপর নির্ভরশীল। কাজেই এ দুটি বিষয় আমাদের কৃষি এবং খাদ্য সরবারহের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে—এটি সহজেই অনুমেয়। তাৎক্ষনিক প্রভাব না পড়লেও সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব বিবেচনা করে আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর জোর দিতে হবে।

প্রথমত, আমরা সার উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ নই। দেশে রাসায়নিক সারের বিপুল চাহিদা থাকায় সার সরবরাহের ক্ষেত্রে আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আরো কিছুদিন চলতে থাকলে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্ববাজারে সারের দাম বাড়বে। সেজন্য আমাদের অভ্যন্তরীণ সার উৎপাদনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। জৈব সারের ব্যবহার বাড়ানোর জন্য কৃষকদের পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে হবে। কোনোভাবেই যেন সারের অপচয় না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়া অনেক সময় কৃষকেরা বুঝতে পারেন না কোন জমিতে কতটুকু সার দিতে হয়। তিউনিসিয়া, মরোক্কোসহ যেসব দেশ থেকে আমরা সার আমদানি করে থাকি তাদের সঙ্গে আগে ভাগেই তিন অথবা পাঁচ বছর মেয়াদি চুক্তি করা যেতে পারে, যেন কোনোভাবেই রাসায়নিক সারের সংকটে উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যাহত না হয়।

দ্বিতীয়ত, ক্রমেই আমাদের কৃষিজমির পরিমাণ কমছে। আশার কথা হচ্ছে, নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবনের ফলে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্বে যে জমিতে ২০ মণ ধান হতো সে জমিতে এখন ৩৫-৪০ মণ ধান হচ্ছে। একই সঙ্গে দুঃখের কথা হচ্ছে, দেশে উদ্ভাবিত উন্নত জাতের ফসলগুলো প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষকের কাছে পৌঁছাতে পারেনি। এখনো সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ হচ্ছে অনেক জায়গায়। কৃষি জমির পরিমাণ চাইলেই বাড়ানো সম্ভব নয়, তাই উত্পাদনশীলতার ওপর জোর দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই। যেহেতু বিশ্বব্যাপী খাদ্যসংকট তীব্রতর হচ্ছে, সেহেতু আমাদের আগে থেকে পদক্ষেপ নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে চেষ্টা করতে হবে। উন্নত জাতের ফসলের বীজ দেশের সর্বস্তরের কৃষকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষিখাতে মোট ভর্তুকির পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। আসন্ন বাজেটে কৃষি খাতে প্রণোদনা আরো বাড়াতে পারলে ভালো হবে।

মোটকথা, কৃষিসেবা জোরদার করতে হবে। কৃষি প্রণোদনা বাড়াতে হবে। কৃষকের দোর গোড়ায় কৃষিসেবা পৌছাতে হবে। ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে। মাঠ পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা দায়িত্ব সহকারে কাজ করছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেবা পেতে অসুবিধা হলে হট লাইন নম্বরে কল করে অভিযোগ জানানোর সুযোগ রাখতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, জিডিপিতে কৃষি খাতের অবদান কমছে, অথচ দেশের ১৮০ মিলিয়ন লোকের খাদ্য সরবারহ করছে কৃষি। তাই আমাদের কৃষির ওপর জোর দিতে হবে। কোনোভাবেই যেন আমাদের খাদ্যসংকটের মুখোমুখি হতে না হয়। সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ে দশ ফোঁড়। কাজেই যা করার এখনই করতে হবে।

মো. শহীদুল ইসলাম
লেখক :শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র:ইত্তেফাক

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ৯, ২০২২ ৮:১৭ পূর্বাহ্ন
সাতক্ষীরা ৩ খাল পুনর্খননে প্রাণ ফিরবে কৃষি ও মৎস্যে
কৃষি বিভাগ

সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে প্রবাহমান একাধিক খালকে বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে ইজারা নিয়ে দখল করে আসছিলেন প্রভাবশালীরা। দীর্ঘদিন অবৈধ দখলে থাকায় খালগুলো মরে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছিল। ফলে বর্ষা মৌসুমে খালগুলো এ অঞ্চলের মানুষের গলার কাটা হয়ে দাঁড়াতো। শুষ্ক মৌসুমে পানি না পেয়ে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ত। চরম বিপাকে ছিল সেখানকার মৎস্য চাষিরাও ।

তবে সম্প্রতি কালিগঞ্জের তিনটি প্রবাহমান খাল প্রভাবশালী দখলদারদের কবল থেকে উদ্ধার করে খনন করে দিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এতে খালগুলো প্রাণ ফিরে পাওয়ার পাশাপাশি সেসব অঞ্চলের কৃষকদেরও মুখে হাসি ফুটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

কালিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৎস্য চাষের উন্নতির লক্ষে জলাশয় সংস্কার প্রকল্পের আওতায় মৎস্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে এবং কালিগঞ্জ উপজেলা মৎস্য অফিসের বাস্তবায়নে কালিগঞ্জের রতনপুর ইউনিয়ন কলকলিয়া খাল, দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের ঘোষখালী খাল এবং তারালি ইউনিয়নের তারালি খাল ৩টি পুর্নখনন করা হয়েছে। এছাড়া কুশলিয়া ইউনিয়নের ভদ্রখালী এলাকায় একটি পুকুর পুনর্খনন করা হয়েছে। পুকুরটি ১৯০৪ সালের পর প্রথম পুনর্খনন ও সংস্কার করায় মানুষের সুপেয় পানির সংকট কাটাতে সাহায্য করবে।

এর মধ্যে খননকৃত কলকলিয়া খালের দৈর্ঘ্য ৩ হাজার ৯৪০ফুট এবং প্রস্থ ৮০ ফুট। ঘোষখালী খালের দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮শ ফুট এবং প্রস্থ ৮৫ ফুট। এছাড়া তারালি খালের দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৮শ ফুট এবং প্রস্থ ৮৫ ফুট খনন করা হয়েছে। প্রতিটি খাল খননের জন্য ৩৩ লাখ টাকা করে বরাদ্দ ছিল।

খালগুলো খনন করায় এই এলাকায় কৃষির ও মৎস্যের ফলন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি খালের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের জন্য পানির অবাধ সরবরাহও নিশ্চিত হবে এবং খালের মাধ্যমে মাছের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি পাবে। এটাকে যদি ধরে রাখা যায় তাহলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে খালগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

রতনপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা শেবানী মন্ডল বলেন, কলকলিয়া খাল দিয়ে ইউনিয়নের শত শত বিঘা বিলসহ বসতবাড়ির পানি নিস্কাশিত হয়। খালটি অবৈধ দখলের কারণে সরু নর্দমায় পরিণত হয়েছিল। এতে কৃষকরাও ঠিকমত পানি না পেয়ে চাষাবাদ করতে পারত না। মৎস্যচাষিরাও বিপাকে পড়ত। খালটি দখলমুক্ত করে খনন করায় সকলেরই সুবিধা হয়েছে। কৃষকরা পানি নিতে পারবে। মৎস্যচাষিরাও উপকৃত হবে। পাশাপাশি আমরাও জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবো।

রতনপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বর বাবু গাজী বলেন, খালটি খনন করায় এলাকাবাসী জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পাবে। খালটি কোনভাবে ইজারা না দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

রতনপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলম আল রাজী টোকন বলেন, কলকলিয়া খালটি কালিন্দি নদীর সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত। অথচ প্রভাবশালীরা বদ্ধ জলাশয় দেখিয়ে ইজারা নিয়ে দখল করে খালটিকে প্রায় মেরে ফেলেছিল। ওই সব দখলদারদের উচ্ছেদ করে মৎস্য অধিদপ্তরের অর্থায়নে খনন করে প্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। খালটি এলাকার মানুষের জীবন জীবিকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানান তিনি।

এদিকে দক্ষিণশ্রীপুর ইউনিয়নের টোনা গ্রামের ঈশ্বর রাধাপদের পুত্র গণেশ সরকার বলেন, ঘোষখালী খালটি দিয়ে বাঁশঘাটা, নবিননগর, বেড়াখালী, সাড়াতোলা, শ্রীপুর, ফতেপুর, গোবিন্দকাটি, সোনাতলাসহ প্রায় ১০টি গ্রামের পানি নিষ্কাশিত হয়ে গোয়ালঘাষিয়া নদীতে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ বিপাকে পড়ত। খালটি খনন হওয়ায় কৃষক ও মৎস্য চাষিসহ সকলেই উপকৃত হবে।

কালিগঞ্জ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, মৎস্য অধিদপ্তরের জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় খালগুলো খনন করা হয়েছে। এতে অত্র এলাকায় কৃষির ও মৎস্যের ফলন বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি খালের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দাদের জন্য পানির অবাধ সরবরাহও নিশ্চিত হবে এবং খালের মাধ্যমে মাছের প্রাচুর্যতা বৃদ্ধি পাবে। এটাকে যদি ধরে রাখা যায় তাহলে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে খালগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ৬, ২০২২ ১২:২৮ অপরাহ্ন
টেকসই উন্নয়নে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক
কৃষি বিভাগ

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের নারীদের অবদান কম হলেও, গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অবদান তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এর পরিমাণ প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের নারীরা তাদের গৃহস্থালির যাবতীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে পারিবারিক দায়িত্ব হিসেবে কৃষিকাজে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। বর্তমানে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান দুই-ই বাড়ছে। নারীদের এ অংশগ্রহণ জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে, বিশেষ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা- দারিদ্র্যমোচন এবং জেন্ডার সমতা অর্জনেও কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক।

আমাদের দেশের অর্থনীতির অবকাঠামো পরিবর্তনের কারণে শিল্প ও সেবাখাতের অনুপাত কৃষিখাতের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো পুরোটা কৃষিনির্ভর, যার অনেকটাই নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের হাতে ধরে। দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষি এবং কৃষিতে নারী উদ্যোক্তাদের অবদান-এ দুই-ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই কৃষি যেমন নারীর হাতে, তেমনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও নারীর হাতে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারীর অংশগ্রহণ যেমন অত্যাবশ্যক, তেমনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও নারীর সরাসরি সম্পৃক্ততা অত্যাবশ্যক।

স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ২০২৪ সালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষিত হবে। জাতিসঙ্ঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এমডিজি বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায় থেকে নেয়া অভিজ্ঞতা পরবর্তী পর্যায়ের জন্য নেয়া পরিকল্পনা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নেও সাফল্যের উদাহরণ সৃষ্টির পথে বাংলাদেশ।

জাতিসঙ্ঘ টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০২১ অনুযায়ী এসডিজি অর্জনে বিশ্বের যে তিনটি দেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে, তারমধ্যে সবার ওপরে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যতা ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি সচল থাকার কারণেই উৎপাদন ব্যবস্থার অবস্থান অনেকটা ভালো রয়েছে, আর এর কারণ হলো কৃষিখাতে নারী শ্রমিক ও নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণ বৃদ্ধি।

বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কৃষি খাতের উপর নির্ভরশীল। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৪ শতাংশ। শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও কৃষি খাতের পরোক্ষ অবদান রয়েছে। দেশের মোট শ্রমজীবীর প্রায় ৪১ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। কৃষিখাতের উন্নয়নের সাথে দেশের বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্যমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষিখাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আর অন্যতম অংশীদার এ খাতের নারী শ্রমিক ও উদ্যোক্তারা, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি সচল রাখতে এ খাতের নারীরা ব্যাপক অবদান রেখেছেন।

টেকসই উন্নয়নের ধারা তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে অংশগ্রহণ এবং দারিদ্র্যমোচন অব্যাহত রাখতে এবং নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের অবদানকে ধরে রাখতে সরকার প্রণীত বিভিন্ন নীতি, আইন, বিধি-বিধানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের নানা কর্মসূচি ও কর্যক্রম লক্ষ্যে পূরণে এসাথে চলমান রয়েছে।

গত কয়েক দশকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কয়েক কোটি শ্রমশক্তি নতুন যোগ হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকের বেশিই নারী। আর এই নারীর বেশির ভাগই কৃষি খাতের নারী শ্রমিক এবং উদ্যোক্তা। নতুন এ সকল নারী উদ্যোক্তা মূলত গবাদিপশু পালন, হাঁসমুরগি পালন, মৎস্য চাষ, শাকসবজি-ফলমূল উৎপাদনসহ ধান, পাট গম চাষাবাদে নিয়োজিত রয়েছে। মূলত গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিতে গতি আনতে নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকাই মুখ্য।

স্বাধীনতার পরে সত্তর ও আশির দশকের দিকে গ্রামীণ নারীরা বাড়ির বাইরে গিয়ে কৃষিকাজ অংশগ্রহণ কমই করতো। তবে নব্বইয়ের দশক থেকে নারীরা কৃষিকাজে বীজ সংরক্ষণ, জমি প্রস্তুত, চারা রোপন, ফসল কাটা এবং ফসল ঘরে তোলাসহ সকল কাজের সাথে যুক্ত। তবে অনেক আগে থেকে বাড়ির গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালনের সাথে নারীরা জড়িত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে নারীরা বাণিজ্যিকভাবে কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে নারীরা ব্যাপকভাবে জড়িত। মাছ চাষ, মৌমাছি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, ফলমূল চাষ থেকে শুরু করে বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশী নানা জাতের সবজি উৎপাদনের বিশাল কর্মযজ্ঞে আজ নারীরা সমান অংশীদার।

পরিসংখ্যান বলছে, বৃহত্তর কৃষি অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। গত ৫০ বছরে কৃষিতে নারীর সংখ্যা শতকের ঘর থেকে কোটিতে পৌঁছে গেছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুসারে, কৃষিতে এখন নারীর অংশগ্রহণের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

দেশে মোট শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে নারী। নারী শ্রমশক্তির মধ্যে ৬৮ শতাংশই কৃষি, বনায়ন ও মৎস্যখাতে জড়িত। কর্মক্ষম নারীদের বেশির ভাগ কৃষিকাজে নিয়োজিত। ফসলের প্রাক বপন থেকে শুরু করে ফসল উত্তোলন, বীজ সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন পর্যন্ত সম্পূণ প্রক্রিয়ায় নারী এককভাবেই করে। বাড়ির বাইরে ফসল ও সবজি চাষ, মসলা উৎপাদন, শুঁটকি ও মাছ প্রক্রিয়াকরণ, মাছ ধরার জাল তৈরি ও মেরামত, পোনা উৎপাদন, গবাদিপশু, হাঁসমুরগি গবাদিপশু পালনের কাজও নারীরা আজ প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত। সামাজিক বনায়নের কাজও হয় নারীর হাত দিয়ে।

নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার কারণে কৃষি পণ্য উৎপাদনে ডাইভারসিফিকেশন (বৈচিত্র্য) বেড়েছে। নারীরা বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশি উন্নত ফলনশীল শাক-সবজি ও ফলমূলসহ নানা জাতের কৃষিপণ্য উৎপাদন করছে। কৃষি অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, কৃষিকাজ বলতে এখন আর শুধু মাঠে ফসল চাষাবাদকেই বোঝায় না, বরং বোঝানো হয় শস্য উৎপাদন, গবাদিপশু পালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ, শাকসবজি, ফলমূল চাষ ও বনায়ন বা বাড়ির আশপাশে এমনকি বাড়ির ছাদেও গাছ লাগানো ইত্যাদি। এ বিবেচনায় এ সময় কৃষিতে পুরুষের তুলনায় নারী অংশগ্রহণ আগের তুলনা অনেক বেড়েছে। পুরুষরা মূলত শহরে পড়াশোনা, চাকরি ও ব্যবসার দিকে বেশি ঝুঁকে যাওয়া গ্রামীণ কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। পুরুষদের মধ্যে যতসংখ্যক পুরুষ কৃষিকাজে যুক্ত, তার চেয়ে নারী কর্মজীবীদের মধ্যে অনেক বেশিসংখ্যক কৃষিকাজে যুক্ত।

কৃষি উদ্যোক্তাদের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদেরকে । উদ্যোক্তা হিসেবে আর্থিক সংকট, ঋণ না পাওয়া, ভূমির মালিকানায় সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া এবং উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাব এবং গ্রামীণ হাট-বাজারে প্রবেশেসহ যোগাযোগ অবকাঠমো ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকার করণে নারীরা কৃষি খাতে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত হয় না বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণের কারণে তাদের নানাবিধ জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি ঋণ ব্যবস্থাকে আরো সহজীকরণসহ পর্যাপ্ত করতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বিপণনের জন্য নারীদের জন্য বিশেষ বাজার স্থাপনসহ অনলাইনে বাজার বিপণন ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তারাও যাতে অনলাইন বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের তৈরিকৃত পণ্য বাজারজাত করতে পারেন- এজন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তুলতে হবে।

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। কৃষি এবং কৃষকরাই বাংলাদেশর গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদন্ড। সরকার গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন দলিল, বিশেষ করে রূপকল্প-২০২১, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি), সার্ক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাস্তবায়নের কৌশল অনুসরণে করে জাতীয় কৃষি নীতি- ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। কৃষি খাতকে টেকসই ও সমৃদ্ধ করতে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কৃষিবান্ধব উদ্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের কৃষি খাতকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি সরকারি চাকুরি ও কৃষিক্ষেত্রে আরো অধিক সংখ্যক নারী কৃষক এবং কৃষি শ্রম-শক্তি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হওয়া প্রয়োজন । কৃষি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নারীর অবদান রাখার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, তাই কৃষি সংক্রান্ত অর্থোপার্জন কর্মকাণ্ডে নারীকে অর্থবহভাবে সম্পৃক্ত করে এবং মানব-সম্পদ উন্নয়নে সরকার নারীর ক্ষমতায়ন; উৎপাদন ও বিপণনে অংশগ্রহণ এবং আয়ের সুযোগ সৃজন তৈরির ওপর আরো অধিক গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।

যেকোনো দেশের নারীদের বাদ দিয়ে বা অবহেলা করে, দূরে রেখে কোনো অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কখনোই সফল হবে না। তাই সারা বিশ্ব আজ অনুধাবন করতে পেরেছে, নারীর সামগ্রিক উন্নয়ন ছাড়া সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন সম্ভব নয়, তাই এসডিজি অর্জনে নারীর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সম্পৃক্ততা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। সেই বিবেচনায় এ দেশের জন্য উন্নয়ন কার্মকাণ্ড তথা কৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ আরো বেশি জরুরি। আগের তুলনায় দেশে নারী-পুরুষের মধ্যকার ব্যবধান বা জেন্ডার গ্যাপ কমে আসছে। আয় উপার্জনক্ষম কাজে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারীর অংশগ্রহণ বাড়ায় নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য কমে আসছে। তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও কৃষিতে নারীর সরাসরি সম্পৃক্ততা অত্যাবশক।

লেখক : সিনিয়র তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা

সূত্র:নয়া দিগন্ত

শেয়ার করুন

প্রকাশ : জুন ৫, ২০২২ ৭:৫৬ অপরাহ্ন
এমএসটিএল ব্রহ্মপুত্রের সার সুপারিশ কার্ড প্রদান
কৃষি বিভাগ

  • বেশি করে মাটি পরীক্ষা করি

  • সার সুপারিশ কার্ড ফলো করি

  • সুষম সার ব্যবহার করি

  • অধিক ফলন ঘরে তুলি

এই স্লোগানকে সামনে রেখে ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা পরীক্ষা গবেষণাগার (এমএসটিএল) “ব্রহ্মপুত্র” কর্তৃক শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ী উপজেলার ৫৬ জন কৃষকের ফসলি জমির মাটি পরীক্ষা ও রাসায়নিক বিশ্লেষণ সম্পন্ন পূর্বক সার সুপারিশ কার্ড প্রদান করা হয়েছে।উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক গবেষণাগার, জামালপুরের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব রাফেজা বেগম, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মাহবুবুল আলম, আঞ্চলিক গবেষণাগার, ময়মনসিংহের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জনাব মোঃ আবুল বাশার, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জনাব মওদুদ আহমেদসহ আরও অনেকেই।

সার সুপারিশ কার্ড প্রদান
জনাব রাফেজা বেগম, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক গবেষণাগার, জামালপুর

বক্তারা মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় মাটি পরীক্ষার গুরুত্ব এবং সুষম সার ব্যবহারের উপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা রাখেন। উল্লেখ্য #ব্রহ্মপুত্র* টীমের মাধ্যমে শেরপুর জামালপুর জেলার ৪টি উপজেলায় কৃষকের মাটি পরীক্ষা করে সার সুপারিশ কার্ড প্রদান করা হয়। কৃষকের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দেওয়া লক্ষ্যে চলমান এই কর্মসূচিকে কৃষক ভাইয়েরা স্বাগত জানান এবং ভবিষ্যতে এই সেবা উপজেলার সকল কৃষক যেন পান সেই দাবি জানান।

আরো পড়ুনঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে তাৎক্ষণিক সেবা পৌঁছাতে কল সেন্টার চালু

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ৩১, ২০২২ ৭:১৮ অপরাহ্ন
বরিশালে জিংকসমৃদ্ধ ধান ও চাল সংগ্রহ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে জিংকসমৃদ্ধ ধান ও চাল সংগ্রহ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ নগরীর খাদ্য অধিদপ্তরের হলরুমে খাদ্য বিভাগ, হারভেস্ট প্লাস এবং গেইন বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জাহাঙ্গীর আলম।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বরিশালের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপÍরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সাবিনা ইয়াসমিন, আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন এবং গেইন বাংলাদেশের কর্মকর্তা ড. আশেক মাহফুজ।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বরিশাল সদরের উপজেলা কৃষি অফিসার মোসা. ফাহিমা হক, বাকেরগঞ্জের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মুসা ইবনে সাঈদ, উজিরপুরের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. তৌহিদ, হারভেস্ট প্লাসের বিভাগীয় সমন্বয়কারী জাহিদ হোসেন প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বলেন, জিংকসমৃদ্ধ চালের মাধ্যমে জনগণের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহজ। তাই এর গুণগতমান ও জাতের বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, জিংকসমৃদ্ধ চাল প্রান্তিক জনগোষ্ঠির কাছে পৌঁছাতে খাদ্য বিভাগ কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে চলতি মৌসুমে জেলায় ৪ শ’৩৩ মেট্রিক টন ব্রি ধান৭৪ সংগ্রহ করা হবে, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৫ ভাগ। কৃষি ও খাদ্য বিভাগের সমন্বিত প্রচেষ্টায় জিংক ধান ও চাল সংগ্রহ কার্যক্রম সফল হবে আশা করি। এজন্য তালিকার পাশাপাশি নিবন্ধন কার্যক্রম সহজ করে এটিকে কৃষক বান্ধব করা হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, এবার বরিশাল জেলায় ৭ হাজার ৯ শ’ ৪৮ হেক্টর জমিতে জিংকসমৃদ্ধ ধানের আবাদ হয়েছে। অনুষ্ঠানে কৃষি ও খাদ্য বিভাগের ৫০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ২৯, ২০২২ ৭:৪০ অপরাহ্ন
বরিশালে এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের কর্মশালা অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): বরিশালে স্মল হোল্ডার এগ্রিকালচারাল কম্পিটিটিভনেস প্রজেক্টের (এসএসিপি) বার্ষিক তদারক ও পর্যালেচনা বিষয়ক আঞ্চলিক কর্মশালা-অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ নগরীর ব্রির হলরুমে এসএসিপির উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ডিএইর পরিচালক ( প্রশিক্ষণ উইং) মো. তাওফিকুল আলম। সভাপতিত্ব করেন ডিএইর বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক হৃদয়েশ্বর দত্ত।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আলমগীর হোসেন, ডিএই পটুয়াখালীর উপপরিচালক একেএম মহিউদ্দিন, ডিএই ভোলার উপপরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর, প্রকল্প পরিচালক ড. মুহাম্মদ এমদাদুল হক, ডিএই পটুয়াখালীর জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক, ডিএই বরিশালের জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার মোসাম্মৎ মরিয়ম, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী চঞ্চল কুমার মিস্ত্রী, প্রকল্পের সিনিয়র মনিটরিং অফিসার সৈয়দ আবু সিয়াম জুনকারনাইন, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার কৃষক আক্তার মহাজন প্রমুখ।

প্রধান অতিথি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কখনো কখনো কৃষকের উৎপাদিত ফসল ঘরে তোলা যায় না। এমন ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য এ প্রকল্প আশার আলো জাগিয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিকূলসহনশীল এবং উচ্চ ফলনশীল ফসলের আবির্ভাব ঘটেছে। এ প্রকল্পে গবেষণা থেকে শুরু করে বাজারজাতকরণের সমন্বয় ঘটানো হয়েছে। এতে কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ১০০ জন অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ২৯, ২০২২ ২:৪৭ অপরাহ্ন
জমি নিয়ে বিরোধের জেরে খুন গরু ব্যবসায়ী
কৃষি বিভাগ

বিরামপুরে এক গরু ব্যবসায়ী ৭ দিন ধরে নিখোঁজের পর পুলিশ মঙ্গলবারতার নিজ বাড়িতে পুঁতে রাখা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় মামলার পর পুলিশের হাতে আটক শাহীন নামে এক যুবক হত্যার দায় স্বীকার করে শনিবার দিনাজপুর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। স্বজনরা জানান, বিরামপুর শহরের পূর্বপাড়া মহল্লার মৃত. সুজার উদ্দিনের ছেলে খাদেমুল ইসলাম স্ত্রীর মৃত্যুর পর থেকে বাড়িতে একাই বসবাস করতেন। তার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছেলেরা আলাদা বাড়িতে থাকে। ১৭ মে সন্ধ্যা থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। খাদেমুল ইসলাম পেশায় একজন গরু ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় খাদেমুলের ছেলে রায়হান কবির ২২ মে বিরামপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। ওসি সুমন কুমার মহন্ত জানান, তদন্তে জানা যায় নিহত গরু ব্যবসায়ী খাদেমুলের সঙ্গে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে প্রতিবেশী সায়েম আলী (শাহীন) ইট দিয়ে আঘাত করে এবং মৃত নিশ্চিত করে মাটিতে পুঁতে রাখে। আসামি শাহীন আদালতে ১৬৪ ধারায় শিকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : মে ২৮, ২০২২ ১১:১৫ অপরাহ্ন
পিরোজপুরের নেছারাবাদে মাটি বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত
কৃষি বিভাগ

নাহিদ বিন রফিক (বরিশাল): পিরোজপুরের নেছারাবাদে মৃত্তিকা নমুনা সংগ্রহ পদ্ধতি ও সুষম সার ব্যবহার বিষয়ক কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ উপজেলা কৃষি অফিসে এসআরডিআই’র উদ্যোগে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এ উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের (এসআরডিআই) সদর দপ্তরের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ছাব্বির হোসেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি অফিসার চপল কৃষ্ণ নাথ। বিশেষ অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক কৃষি তথ্য অফিসার মো. শাহাদাত হোসেন এবং আয়োজক প্রতিষ্ঠানের উধর্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কাজী আমিনুল ইসলাম।

প্রধান অতিথি বলেন, মাটি হচ্ছে ফসলের মায়ের মতো। তাই এর যত্ন নেওয়া দরকার। আর এজন্য জমিতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সম্পর্কে জানতে হবে। কোনো উপাদানের ঘাটতি হলে ফসলভেদে তা পূরণ করা জরুরি। এটি না করে যথেচ্ছ পরিমাণে সার প্রয়োগ করলে মাটির গুণাগুণ হারিয়ে যায়। পাশাপাশি ফসলের আশানুরূপ উৎপাদন ব্যাহত হয় ।

তিনি আরো বলেন , কীভাবে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়, সেটি আপনাদের জানা প্রয়োজন। সংগৃহীত নমুনা স্বল্প মূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে। মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সার ব্যবহার করলে আপনারা লাভবান হবেন। এতে দেশ উপকৃত হবে। কৃষি হবে সমৃদ্ধ।

প্রশিক্ষণে গোপালগঞ্জ-খুলনা-বাগেরহাট-পিরোজপুর কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প (এসআরডিআই অঙ্গ) প্রকল্পের আওতাধীন ৬০ জন কৃষক অংশগ্রহণ করেন ।

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop