৫:০২ অপরাহ্ন

রবিবার, ১৭ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
প্রকাশ : মার্চ ১, ২০২৩ ৩:০৫ অপরাহ্ন
নড়াইলে গমের উচ্ছা ফলনে খুশি চাষিরা
কৃষি বিভাগ

নড়াইলে বেড়েছে গমের আবাদ। আগে এই জেলায় ব্যাপক পরিমানে গমের চাষ হলেও পরে ব্লাস্ট রোগের আবির্ভাবের কারণে কৃষকরা চাষ থেকে বিরত থাকেন। গত কয়েকবছর ধরে চাষিরা আবার গম চাষে আগ্রহী হয়েছেন। চলতি বছর কৃষি বিভাগে লক্ষ্যমাত্রা থেকে বেশি জমিতে গমের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নড়াইল জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মতে, আগে কৃষকরা ব্যাপক ভাবে গমের চাষ করতেন। গমে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হলে চাষ কমে যায়। তারপর ২০২০ সাল থেকে আবার গম চাষের প্রতি কৃষকরা ঝুঁকতে থাকেন। চলতি বছর ২০৮৫ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও ২১২০ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। ক্রমাগত চাষের জমির সংখ্যা বাড়ছে।

চাষিরা জানান, আগে গম চাষের খরচ বেশি ছিল, বাজারে গমের দামও কম থাকতো। এছাড়ও গাছের বিভিন্ন রোগের কারণে ফলন নষ্ট হতো। তাই গম চাষ কমে যায়। এখন অন্যান্য ফসলের তুলনায় গম চাষে লাভবান হওয়া যায়। আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলন হবে। আর বাজারদর ভালো থাকলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ দীপক কুমার রায় বলেন, কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বারি গম-৩২ ও ৩৩ এবং ডব্লিউএমআরআই-২ জাতের গম চাষ করছেন। আগের তুলনায় এখন গমের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও ফলন দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা কৃষকদের গম চাষের পরামর্শ ও সহযোগিতা করছি। আশা করছি কৃষকরা বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ভালো দামে বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৮, ২০২৩ ১০:২০ পূর্বাহ্ন
জমকালো প্রচারণা কাজে আসেনি ঝিকরগাছা খাদ্য বিভাগের
কৃষি বিভাগ

মিঠুন সরকার, ঝিকরগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ চলতি আমন মৌসুমের ধান চাল সংগ্রহ অভিযানে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় জমকালো প্রচারণা কোন কাজেই আসেনি কৃষক তথা খাদ্য বিভাগের।প্রাপ্ত তথ্য হতে জানা যায়, ‘গত বছরের ১৭ই নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে প্রতিটি ইউনিয়নে মাইকিং, পোস্টার ও ডিজিটাল মাধ্যমে ব্যাপক আকারে প্রচারণা চালানো হয়। বিভিন্ন মাধ্যমে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। যা আজ ২৮ শে ফেব্রুয়ারী শেষ হচ্ছে।‘

এতো প্রচারণা সত্ত্বেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এক কেজিও ধান সংগ্রহ করতে পারেনি উপজেলা খাদ্য বিভাগ।

অনুসন্ধানে যে সকল বিষয়  উঠে এসেছে তা হলোঃ

  • বাজার মূল্যের চেয়ে সরকার নির্ধারিত ধানের মুল্য অনেক কম
  • কৃষক স্থানীয় পর্যায়ে সরাসরি বাড়ি থেকে ধান বিক্রি করতে পারেন। ফলে পরিবহন ও শ্রমিক খরচ থাকেনা।
  • সরাসরি টাকা হাতে পান। কিন্তু সরকারী প্রক্রিয়া ব্যাংক ভিত্তিক হওয়ায় অনেক কৃষক অনাগ্রহী।
  • ধানের মান নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়না। কিন্তু সরকারী ভাবে ধান বিক্রি করতে গেলে আদ্রতা সঠিক মাত্রায় থাকতে হয়। যেখানে অনেক কৃষক অনাগ্রহ প্রকাশ করে।
  • সরকারী ভাবে ধান বিক্রিতে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। যেটা অনেক কৃষক ঝামেলা মনে করেন।
  • স্থানীয় বাজার মূল্য সরকার নির্ধারিত বাজার মূল্যের সমান হলেও কৃষক ধান বিক্রিতে অনাগ্রহী।

উপজেলার মাগুরা ইউনিয়নের ডহর মাগুরা গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ‘আমরা ওসব আদ্রতা বুঝিনা। ধান কাটবো, শুকাবো আর বাজারে নিয়ে বিক্রি করবো। আমরা চাষী মানুষ এতো ঝামেলা বুঝিনা। সরকার যদি সমান সমান দাম ও দেয় তাহলে আমরা ধান বেচবো না।

ফুলবাড়ি গ্রামের কৃষক হসেন আলী জানান, ‘একবার ধান বেচতে উপজেলায় গেছিলাম। ধানের তাপ কম না কি বলে আমার ধান ফেরত দিয়েছিলো। আমরা চাষা মানুষ এতো কিছু কি বুঝি। আমার অনেক টাকা লস হয় সেবার শুধু ভাড়া দিতে দিতে। তাই আর আর বিক্রি করবো না এভাবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো.আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত ধানের দাম স্থানীয় বাজারের চেয়ে কম। ফলে কৃষক ধান বিক্রিতে অনাগ্রহ দেখিয়েছেন।আর আমরা কৃষকের সুবিধা বিবেচনা করে এগুলো নিয়ে বেশি জোর দেয়নি। কারণ কৃষক বাঁচলে কৃষি বাঁচবে ।ধানের বদলে চালের মাধ্যমে এ ঘাটতি পূরণের কোন পরিকল্পনা নেই বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৭, ২০২৩ ৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
আমনের জমিতে আলু চাষ
কৃষি বিভাগ

অতিরিক্ত আয় করতে আমন ধান কাটার পর একই জমিতে আলু চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন জয়পুরহাটের পাঁচবিবির কৃষকরা। এতে চাষের খরচ পুষিয়ে নেয়ার পাশাপাশি একই জমিতে তিন ফসল উৎপাদন করছেন তারা।

জানা যায়, পাঁচবিবির প্রধান অর্থকরি ফসল হলো ধান। এখন চাষিরা ধান চাষের পাশাপাশি সবজির আবাদও করছেন। চলতি মৌসুমে কৃষকরা আমন ধান কাটার পর অতিরিক্ত লাভের আশায় আলু চাষ করেছেন। বর্তমানে কৃষকরা জমি থেকে আলু উত্তোলন করছেন।

কৃষি অধিদপ্তরের মতে, কৃষকরা আমন ধান ঘরে তোলার পর সেই জমিতে পাকরি, রোমানা, কার্ডিনাল (লাল), গ্রানোলা, বিনেলা, ক্যারেজ এবং ডায়ামন্ড জাতের আলুর চাষ করেছেন। কয়েক দফা বৃষ্টিতেও আলুর ক্ষতি হয়নি। ফলে এ বছর পাঁচবিবিতে আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। কৃষকরা জমি থেকে পরিপক্ক আলু উঠিয়ে বিক্রি শুরু করেছেন।

বাগজানা ইউনিয়নের খোর্দ্দা গ্রামের কৃষক হাজেরা বিবি ও প্রদীপ চন্দ্র বলেন, আমরা ধান কাটার পর জমি খালি ফেলে না রেখে আলু চাষ করেছি। আলুর বীজ রোপনের ৬৫ দিনের মধ্যে পরিপক্ক হয়েছে। আলু চাষে আমার খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এখন পাইকাররা আমরা ১ একর জমি ৭৫ হাজার টাকা কিনে নিয়েছে। এই অল্প সময়েই আমার ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়েছে।

কৃষক হবিবর বলেন, আমি ১৫ কাঠা জমিতে আলুর চাষ করেছি। বিঘাপ্রতি ৪৫-৫০ মণ আলুর ফলন পাওয়া যায়। এতে বিঘাপ্রতি আলু চাষে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিমণ আলু ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি।

পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন, চলতি বছর উপজেলায় ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে। লাভের আশায় কৃষকরা আগাম জাতের আলু চাষে নেমে পড়েছেন। আলুর ভালো ফলন হয়েছে। আশা করছি কৃষকরা লাভবান হবেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ ৯:৫২ অপরাহ্ন
বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক সেমিনারে যোগ দিতে কলকাতায় যাচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী
কৃষি বিভাগ

বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনা ছড়িয়ে দিতে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন আয়োজিত কর্মসূচির উদ্বোধন এবং বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনা শীর্ষক আলোচনা সভায় অংশ নিতে ভারতের কলকাতায় যাচ্ছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। আজ শনিবার সন্ধ্যায় তিনি কলকাতার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন বিশ্বব্যাপী বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১৪ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও অগ্রগতি নিয়েও প্রচারণা চালাবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এর অংশ হিসাবে কলকাতায় এটির আয়োজন করেছে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ভারত কমিটি।

আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি রবিবার বিকাল পাঁচটায় কলকাতার রোটারি সদন অডিটোরিয়ামে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে সেখানে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা।

আলোচনা সভায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়, সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্র, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি ড. মশিউর মালেক, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. পবিত্র সরকার, বিশ্ব বঙ্গ সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ড. রাধাকান্ত সরকার, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি, কলকাতায় বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনার, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ভারত কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, সিনিয়র সহসভাপতি সাংবাদিক আনোয়ারুল হক ভূইয়া, আন্ত:দেশীয় সমন্বয়কারী অবনী কুমার ঘোষসহ বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ ৮:৪৯ অপরাহ্ন
কয়রায় লবণসহিষ্ণু বোরো ধানের আবাদ বেড়েছে
কৃষি বিভাগ

খুলনার উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় দিন দিন বাড়ছে লবণসহিষ্ণু বোরো ধানের আবাদ। এ ছাড়া নতুন নতুন এলাকায় লবণপানির চিংড়ি চাষের পরিবর্তে লবণসহিষ্ণু বিভিন্ন জাতের বোরো ধানের চাষও বেড়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

বর্তমানে কৃষকরা বোরো রোপণ-পরবর্তী পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। বোরো আবাদ চাষ ব্যয়বহুল হলেও ধানের বাজার ও (গোখাদ্য) খড়কুটার দাম বাড়ায় লাভজনক মনে করছেন কৃষকরা।

কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৩৬ হাজার বিঘা জমিতে বোরো চাষ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে, যা গত বছরের তুলনায় দুই গুণেরও বেশি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে প্রায় ২৭ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হতে পারে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) অসীম কুমার দাস বলেন, উৎপাদন ভালো হওয়ায় এ উপজেলায় লবণসহিষ্ণু বোরোর আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় তিন হাজার কৃষকের মধ্যে বিনা মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক হাজার কৃষককে ২০ কেজি সার ও পাঁচ কেজি উফশী জাতের এবং দুই হাজার কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড এসএলএইটএইচ জাতের ধান দেয়া হয়েছে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ ৮:২২ অপরাহ্ন
লেবু চাষে ঝুঁকছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

লেবু চাষে ঝুঁকছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া চাষিরা। ফলনের পাশাপাশি বাজারদর ভালো পাওয়ায় দিন দিন এই জেলায় লেবুর চাষ বাড়ছে। এতে অধিক দামে বাজারে বিক্রি করে খুশি চাষিরা। জানা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় সাধারণত পাঁচ জাতের লেবুর চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে কাগজি, পাতি, এলাচি, বাতাবি ও নতুন জাতের হাইব্রিড সিডলেস লেবু রয়েছে। কাগজি লেবুর চাহিদাও ভালো। এছাড়া অন্যান্য লেবুরও ভালো চাহিদা রয়েছে। এর চাষে তুলনা মূলক পানি সেচ তেমন একটা লাগে না। সার, পরিচর্যা ও শ্রমিক খরচ খুবই কম হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে লেবুর চাষ। উৎপাদিত লেবুর ভালো দামও পাচ্ছেন কৃষকরা।

আখাউড়ার চাষি আতাউর রহমান বলেন, আমি ১ বিঘা জমিতে সিডলেস ও দেশীয় জাতের লেবু আবাদ করেছি। এখান থেকে প্রায় সারা বছরই বিক্রি করতে পারি। বাজারে দাম ভালো থাকায় এখন দৈনিক ৪ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করতে পারছি। বলেন, বাজারে নিতে হয় না। বিভিন্ন জায়গার পাইকাররা বাগান থেকেই কিনে নিয়ে যান। এবার লেবুর ভালো দাম পাওয়ায় আমি খুবই খুশি।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সুশান্ত সাহা বলেন বলেন, লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ সাইট্রিক অ্যাসিড, অ্যাসকরবিক অ্যাসিড, ভিটামিন ‘সি’। এছাড়া লেবুর পানি দেহে প্রয়োজনীয় এনজাইম তৈরি করে। আমরা কৃষকদের লেবু চাষের কলাকৌশল সম্পর্কে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করছি।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ ৮:১৫ অপরাহ্ন
চাষাবাদে আধুনিকতার ছোঁয়া, উৎপাদন খরচ কমবে ২৫-৩০ শতাংশ
কৃষি বিভাগ

জমির অপচয় রোধ ও খরচ কমিয়ে ফসল উৎপাদনে আশার আলো দেখাচ্ছে ‘সমলয়’ নামের নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি বৃহৎ পরিসরে প্রয়োগ করায় পুরো প্রক্রিয়ায় যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম হয়। সমলয় পদ্ধতিতে ভিন্ন ভিন্ন জমিতে নানা জাতের ধান চাষ না করে কৃষকরা একটি জমিতে সব প্লটে একই জাতের ধান রোপণ করেন। এই পদ্ধতিতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে সব প্লটে ফসল কাটা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে একই সময়ে সম্পাদিত হয়।

জমির অপচয় রোধে প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ রোপণ করা হয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। প্রস্তুত হয়ে গেলে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার ব্যবহার করে চারা রোপণ করা হয়। একই সময়ে সব চারা রোপণের কারণে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সব প্লটের ফসল একই সময়ে পাকে। ফলে সব প্লটের ধান একসঙ্গে মেশিন দিয়ে কাটা ও মাড়াই করা যায়।

কৃষি অধিদপ্তর বলছে, ছোট ছোট জমিতে বড় কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার কষ্টকর। তাই এলাকাভিত্তিক কৃষকদের সংগঠিত করে অধিক জমিতে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে একই সময়ে, উন্নত মানের একই জাতের ধান লাগানো হয়েছে। এতে করে ধানগুলো একসঙ্গে পাকলে সহজেই যন্ত্র দিয়ে কাটা সম্ভব হবে। এতে করে একদিকে যেমন কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে, অন্যদিকে সব জমি একসঙ্গে চাষ করায় উৎপাদন খরচও কম পড়ছে। আবার যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্যও এই পদ্ধতির চাষাবাদ ব্যাপক উপকারী। কারণ ফসল পেকে যাওয়ার পর কোনো দুর্যোগের পূর্বাভাস পেলে সহজেই ফসল কেটে ফেলা যাবে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে। এতে যে সময় লাগবে, একই সময়ে শ্রমিক দিয়ে এটা করা সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেছেন, ‘সমলয়’ হলো, আমরা একই সময় ফসল লাগাব, আবার একই সময় মেশিনে ফসল কাটব। কৃষি অধিদপ্তরের সঙ্গে ব্রিও সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য দিচ্ছে। ব্রির ১১টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রধান কার্যালয়ে ধান কাটার মেশিন আছে। ব্রি উদ্ভাবিত এই মেশিনগুলো বিভিন্ন স্থানের কৃষকদের ধান কাটার জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস) তথ্য বলছে, ধানচাষ লাভজনক করার পথ হলো উৎপাদন ব্যয় কমানো। আর উৎপাদন কমাতে হলে সমলয় চাষের বিকল্প নেই।

ব্রির গবেষণা তথ্য বলছে, সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে উৎপাদন ব্যয় কমছে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। পাশাপাশি বেড়ে যাচ্ছে কৃষকের লাভ। এর মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে আধুনিক চাষাবাদেও অভ্যস্ত হতে শুরু করেছেন দেশের কৃষকরা। সরকারি উদ্যোগে যে কৃষি ব্লকগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেখানে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হয়েছে। বীজতলা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ট্রে দেওয়া হয়েছে। রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে যে বীজ রোপণ করা হয়েছে, তার খরচও সরকার দিচ্ছে। ব্লকের জমিগুলোতে যতটুকু রাসায়নিক সার দরকার, তার সবটাই বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ধান পাকলে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টরের মাধ্যমে কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে বস্তায় তোলা পর্যন্ত কাজগুলোও করা হবে মেশিনের মাধ্যমে, এর খরচও সরকার বহন করছে।

কর্মকর্তারা বলেন, উৎপাদন খরচ কম পড়ায় এবং লাভের মার্জিন বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সমন্বিত পদ্ধতিতে ধান চাষে আরো উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

২০১৯-২০ সালে ১২টি জেলায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। ওই সময় প্রদর্শনী আকারে ৬০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়। এ থেকে সফলতা পাওয়ার পর থেকেই কৃষকদের মধ্যে বাড়তে থাকে নতুন চাষপদ্ধতির জনপ্রিয়তা।

চলতি বোরো মৌসুমে ৬১ জেলার মোট ৫ হাজার ৫৫০ একর জমিতে ১১০টি ব্লক সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। এগুলো সবই হচ্ছে সরকারি প্রণোদনার আওতায়। এছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকরা নিজ খরচেই এই পদ্ধতিতে চাষ করছেন।

প্রচলিত পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে এলাকাভেদে খরচ হয় প্রায় ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা, যেখানে রোপণ যন্ত্র (রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার) ব্যবহার করলে ব্যয় থাকে ১০ হাজার টাকার টাকার মধ্যে। একইভাবে ধান কাটার ক্ষেত্রেও সময়স্বল্পতা এবং সারা দেশে প্রায় পাশাপাশি সময়ে কর্তনকাজ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে হেক্টরপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়- সেখানে শ্রমিক দিয়ে কাটা, পরিবহন, মাড়াই ও ঝাড়াই বাবদ এলাকাভেদে প্রায় ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এই হিসাবে শুধু রোপণ ও কাটায় যান্ত্রিকীকরণ করা সম্ভব হলে ধানের উৎপাদন খরচ হেক্টরপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা কমে আসবে।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৪, ২০২৩ ১০:১৯ অপরাহ্ন
খুলনায় আগাম তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা!
কৃষি বিভাগ

কৃষকরা বোরো ধানের মৌসুম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই তরমুজ চাষ শুরু করে দিয়েছেন। গত বছরের মতো যেন এবছরও লোকসানে পড়তে না হয় তাই কৃষকরা আগাম তরমুজ চাষে নেমে পড়েছেন।

জানা যায়, খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার কাতিয়ানাংলা এলাকার বিলে চাষিরা তরমুজ চাষ শুরু করেছে। তারা আধুনিক পদ্ধতিতে জমি তৈরী করে বীজ বপন করেছেন। আসন্ন রমজান মাসে বিক্রি করাই তাদের লক্ষ্য।

বটিয়াঘাটার বিলে সরিজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চাষিরা তরমুজ চাষের জন্য জমি তৈরী বীজ বপন করছেন। কেউ কেউ আবার আধুনিক পদ্ধতিতে তরমুজের চারা উৎপাদন করে চারা দেড় থেকে দুই ইঞ্চি লম্বা হলে তা জমিতে রোপণ করছেন।

কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছর দাকোপ উপজেলায় ৭ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ আবাদ হয়। তারপরেই বটিয়াঘাটায় বেশি চাষ হয়। কৃষকরা ধান চাষের পরেই আর সময় নষ্ট না করে তরমুজ চাষে লেগে পড়েন। গত বছরের তুলনায় এবছর তরমুজ চাষ বেশি হতে পারে।

বিলের তরমুজ চাষি মো. নুর ইসলাম শেখ বলেন, আমি গত বছর ১১ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন সমস্যার কারণে লাভের মুখ দেখতে পারিনি। গত বছর বোরো ধান উঠে যাওয়ার পর নাবী করে লাগানো তরমুজের ফলন ভালো হলেও পরবর্তিতে ক্ষেতেই নষ্ট হয়েছে হাজার হাজার তরমুজ।

তিনি আরো জানান, আমি এবছর সেই ১১ বিঘা জমিতে আগাম তরমুজ চাষ শুরু করেছি। ইতোমধ্যে জমিতে বীজও বপন করেছি। আবার কিছু জায়গায় উৎপাদিত চারাও লাগিয়েছি। এখন চলছে পানি দেওয়া ও পরিচর্যার কাজ। ফলন ভালো হলে এই ১১ বিঘা জমির তরমুজ ১২ -১৪ লাখ টাকা বিক্রি করতে পারবো।

আরেক কৃষক মো. মোশারফ হোসেন শেখ বলেন, আমি এবছর ১০ বিঘা জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। গত বছর লাভ হয়নি। রমজান মাস শেষ হয়ে যাওয়ায় বড় বড় তরমুজ ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গেছে। গত বছরের মতো যেন এবছরও লোকসান না হয় তাই এবছর আগাম চাষ করছি। জমিতে রোপণ করা চারা তিন ইঞ্চি ছাড়িয়ে গেছে। তরমুজ গাছের ভালো ভাবে যত্ন নিচ্ছি। এবছর কাতিয়ানাংলার বিলে ৪৫ একর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ হচ্ছে।’

বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রবিউল ইসলাম জানান, গত বছর চাষিরা লোকসানে পড়ায় এবছর আগাম তরমুজ চাষে ঝুঁকেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে তরমুজের ভালো ফলন হবে। আর রমজান মাসে তরমুজের চাহিদা থাকবে বলে তারা তখন ভালো দামে তরমুজ বিক্রি করে লাভবান হতে পারবেন বলে আশা করছেন।

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৩ ৭:৪১ অপরাহ্ন
সূর্যমুখী চাষে লাভের আশা কুড়িগ্রামের চাষিদের
কৃষি বিভাগ

কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে সূর্যমুখী চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সার, কীটনাশক ও ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকদের মুখে হতাশার ছাপ থাকলেও দর্শনার্থীদের সমাগম চোখে পড়ার মতো। সূর্যমুখী ফুলের বাগানের মনোরম দৃশ্য দেখতে এবং ছবি তুলতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসছেন দর্শনার্থীরা।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ৩৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে।আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কৃষকদের দেওয়া পরামর্শগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন হলে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সরেজমিনে জানা যায়, সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের মহিষের চর গ্রামে ১২ একর জমিতে বারি-২ জাতের সূর্যমুখী চাষ করেছেন মো. আবু বক্কর সিদ্দিক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এবারের সূর্যমুখী চাষে ব্যয় একটু বেশি। প্রতিদিন জমিতে পানি দিতে হচ্ছে। ডিজেল, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি। কয়েকদিন আগে বাগান নিয়ে হতাশ ছিলাম। সূযমুখী ফুল ফুটবে কি না! এখন ফুলের গঠন ভালো হচ্ছে। আশা করছি লাভবান হবো।’

তিনি বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষ করে এ বছর একটু অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছি। তবে ব্যাংকগুলো ঋণের ব্যাপারে সহনশীল হলে খুব উপকার হতো। এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছে।’

সূর্যমুখী ফুলের চাষ দেখতে আসা মো. ইয়াকুব আলী বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষ দেখে খুবই ভালো লাগলো। শুনলাম সূর্যমুখী চাষ নাকি লাভজনক। আমার ইচ্ছা আছে, আগামীতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করবো।’

মো. সুরুজ আলী বলেন, ‘আমি ঘোগাদহে আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছি। সূর্যমুখী বাগানের কথা শুনে দেখতে এলাম। দেখে খুব ভালো লাগলো। পরে বন্ধু-বান্ধবসহ সূর্যমুখী বাগান দেখার জন্য আসবো।’

মহিষের চর গ্রামের মো. ইমরান আলী বলেন, ‘আমাদের এই চরে আগে কখনো সূর্যমুখীর চাষ দেখিনি। এ বছর প্রথম আমাদের এলাকায় সূর্যমুখী চাষ হচ্ছে। দেখে ভালো লাগছে।’

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, ‘৩৫ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। কৃষকদের মাঝে সার ও বীজসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে যদি তেল উৎপাদনের ব্যবস্থা করা যেত, তাহলে আরও বেশি লাভ করতে পারতেন চাষিরা। তারপরও আশা করছি, কৃষকরা সূর্যমুখী চাষে লাভবান হবেন।’

শেয়ার করুন

প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৩, ২০২৩ ৭:২০ অপরাহ্ন
ফলন বাড়াতে কৃষিবিদদের গবেষণা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর
কৃষি গবেষনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈশ্বিক প্রতিকূল পরিস্থিতি ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে খাদ্যশস্যের ফলন বাড়াতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কৃষিবিদদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’র সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধনকালে একথা বলেন। তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে, আমাদের নিজেদের খাদ্যশস্য উৎপাদন করতে হবে।’ শেখ হাসিনা আরো বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষিতেও বাংলাদেশকে ঐতিহ্যগত শস্যের পাশাপাশি নতুন জাতের শস্য উৎপাদন করতে হবে।

তিনি গাজীপুরে ব্রি-তে বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তি কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন।

টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরতে বহুমুখী গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন অংশীদারিত্বে সহযোগিতার লক্ষ্যে কানাডার সাচকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির সাথে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পর ব্রি-তে এই কেন্দ্রটি স্থাপিত হয়।

যদিও প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন, বাংলাদেশ শুধু খাদ্যশস্য উৎপাদনেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেনি, বরং বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ফলমূল ও অন্যান্য কৃষিপণ্যও উৎপান করে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুদ্ধে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, তাই তাঁর সরকার দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তুলতে নানা ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মেলাতে, আমরা ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স, মেশিন, ইন্টারনেট ও অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি সম্পর্কে জেনেছি। আমাদের এই প্রযুক্তিগুলো কাজেও লাগাতে হবে।’

কৃষিমন্ত্রী ড. মুহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে ব্রি’র মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ‘ব্রি’র ৫০ বছরের গর্ব ও সাফল্য’ শীর্ষক একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী ব্রি’তে আগমন করে সেখানে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করেন। এছাড়াও তিনি ব্রি’র সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে উড়িয়ে দেন।

এ সময় কৃষি সচিব ওয়াহিদা আক্তার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জিন বালি, গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অ্যান্ড চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার স্টেভেন ওয়েব অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। প্রধানমন্ত্রী চারাগাছ রোপন, ব্রি ল্যাবরোটরি ও এর বিভিন্ন উদ্ভাবন পরিদর্শন এবং ‘ধান-কাব্য’ নামের একটি সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। এছাড়াও তিনি ব্রি ও বিএআরসি এর পাঁচটি গবেষণা গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, দেশের জনসংখ্যা দিন দিনই বাড়ছে। তিনি বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও আমরা তাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে স্বনির্ভর করে এবং দেশের বছওে ৪০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি মিটিয়ে খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ২০০১ সালে বিএনপি জামাত জোট ক্ষমতায় আসে এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যে বাংলাদেশ পুনরায় খাদ্য ঘাটতির সম্মুখিন হয়।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়লাভ করে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করেই দেশে ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি পায়। আওয়ামী লীগ সরকার এ অবস্থা মোকাবেলায় কৃষি গবেষণা, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ গ্রহন করে এবং কৃষকদের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বীজ-সার বিতরণ করে এবং কৃষকদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেয়া হয়। এই উদ্যোগের ফলে আমরা খারাপ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে সামনে এগিয়ে যাই। ]

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ফসল চাষ এবং আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করায় কৃষি উৎপাদন পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি বলেন, ব্রি উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে।

এ পযর্ন্ত ১১১ ধরণের ধানের আধুনিক জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ১০৪ টি ইনব্রিড এবং ৭ হাইব্রিড। এর মধ্যে ২৪টি বিভিন্ন প্রতিকুলতা সহিঞ্চু জাত রয়েছে। যার ১০টি লবনাক্ততা সহিঞ্চু, তিনিটি ডুবে যাওয়া সহিঞ্চু, তিনটি খরা সহিঞ্চু, চারটি শীত সহিঞ্চু, দু’টি জলোচ্ছ্বাসে ডুবে যাওয়া সহিঞ্চু, একটি আধা গভীর জল এবং দ্বৈত সহিঞ্চু (সাল+সাব)।

এ ছাড়াও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ১৩টি প্রিমিয়াম মানের, পাঁচটি জেডএন সমৃদ্ধ, এবং তিনটি নি¤œ জিআই (গ্লাইসেমিক ইনডেক্স) ধান উদ্ভাবন করা হয়েছে। দেশের মোট ধানি জমির ৮০ শতাংশেরও বেশি ব্রি ধানের চাষ করা হচ্ছে। জাতীয় ধান উৎপাদনে এর অবদান প্রায় ৯১ শতাংশ।

প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, ব্রি’র বিভিন্ন জাতের ধান উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে একটি মাত্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। এর মধ্যে দুটি করা হয়েছে কৃষি শিক্ষার জন্য। এদু’টি হচ্ছে দিনাজপুর হাজী দানেশ ও পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি আরও বলেন, তার সরকার শেরে বাংলা ও বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী প্রায় আড়াই কোটি শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার বিশেষ করে গবেষণার জন্য বৃত্তি প্রদান করছে। তিনি বলেন, আমি সব সময় মনে করি গবেষণা ছাড়া ভাল কিছু করা সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ হিসাবে সরকার কৃষি গবেষণায় বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। পাশাপাশি, সরকার স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং বিজ্ঞান গবেষণায়ও দৃষ্টি দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু’র পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরা কৃষিতে পদক্ষেপ নিয়েছি। কৃষির যান্ত্রিকায়নের জন্য আমরা বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছি।

সরকার প্রধান দেশের তরুণদের কৃষিতে সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর অধিক গুরুত্বারোপ করে বলেন, তাদের স্কুল জীবন থেকেই এটি শুরু করতে হবে। বাসস

শেয়ার করুন

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop